পরিণতি
পর্ব ১
জাহিদের এখন বয়স অনেক। তাও প্রতিদিন চেয়ারটার যত্ন নিতে ভুলে না। প্রতিদিন সকালে একটু যত্ন আর একটু পরিষ্কার করা তার চাই ই চাই । আজকেও সে চেয়ারটার হাতল পরিষ্কার করছিল, তখন তার ছেলে রাফাত আসল-
রাফাত – আব্বু সকাল সকাল আবার কি নিয়া পরলা?? আবার এই পুরান চেয়ার নিয়া কি করতাসো?
জাহিদ – বাবা, ওই একটু টুকটাক ঠিক করছি। মাত্র উঠলি?? খাবার দেওয়া আছে খেয়ে নে।
রাফাত – বাবা টাকা দেও ,আমি আর তুহিন বাইরে যাব কাজ আসে ।
জাহিদ – বাবা মাসের মাত্র ১০ দিন পার হয়েছে, জানিসই তো আমাদের অবস্থা।
রাফাত – বাবা, ছোটবেলা থেকে দেখছি, আমি যাই বলি টাকা নাই , খালি বল পরে ।
জাহিদ – বাবা, আমরা গ্রামের অই জমি চাষের টাকা দিয়াই চলি, টাকা কই পাব??
রাফাত – আমি জানি না, দিবা মানে দিবা। এখনই ১০০০ দেও
জাহিদ নিজের পুরনো জ্যাকেট থেকে ৫০০ টাকা বের করে ছেলের হাতে দিল ।
জাহিদ – বাবা এটা নে, আমার ইনসুলিন পরে কিনব নি।
রাফাত টাকা নিয়ে চলে গেল ।
জাহিদ চুপচাপ চেয়ারটায় মনোযোগ দিল । তার চোখে পানি, সে চেয়ারটার কাছে গেল –
জাহিদ – ওগো তুমি মন খারাপ কর না, ছেলে মানুষ । জানো পুরো তোমার মত হয়েছে । জেদি । বলেছিলাম না ?? ও তোমার মত হবে????
এসব বলতে বলতে জাহিদ চোখ মুছল এবং ছাদে গেল।
সাথে করে একটা কি যেন কাগজ নিল এবং একটা গোলাপ গাছের সামনে দাঁড়াল।
কাগজে লেখা ছিল-
”জাহিদ, ভালো থেকো। আজকে তুমি হয়ত ভাববে আমি তোমার উপর রাগ করেছি, বিশ্বাস কর আমার রাগ নেই। আমার শেষ আশা তুমি রাফাতকে দেখে রেখো আর গোলাপ গাছটার খেয়াল রেখ ”
জাহিদ এই কাগজটা প্রতিদিন সকালে পরে এবং তার অতীতকে ভুলে যেতে চায় ।
তার ছাদে এখন প্রায় ১০ টার মত গোলাপ গাছ ।
কিন্তু কি হয়েছিল তার? রাফাত এর পরে কি হল? এইসব না হয় পরের পর্বেই জানলাম।
লেখক – তাহসান ইসলাম
Leave a comment