- বই : সফলতার কান্না
- লেখক : সিলভিয়া অ্যান হিউলেট
- অনুবাদক : তাবাসসুম মোসলেহ
- ক্যাটেগরি : নারী, নারীবাদ, ক্যারিয়ার
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 288
মেরিট-ডিমেরিট প্রসঙ্গে মাঝেমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ তর্কবিতর্ক হয়। আমি
নিজে অনেকবার চেয়েছিলাম বিষয়টি নিয়ে আর্টিকেল বা পুস্তিকা টাইপ কিছু একটা
লিখব; কিন্তু নানা ব্যস্ততার কারণে হয়ে ওঠেনি। বইয়ের সম্পাদকীয় তো লিখতেই
হবে—তাই ইচ্ছাটাকেই ব্যস্ততার অংশ বানিয়েনিলাম আজ; তবে সংক্ষেপেই কিছু
কথা বলব।
আমার যখন বিষয়টা নিয়ে লিখতে প্রবল ইচ্ছা হচ্ছিল, তখন নিজেকে প্রশ্ন
করছিলাম—‘আমি এই বিষয় নিয়ে কী কারণে লিখতে আগ্রহ বোধ করছি? কেন
আমার মাথায় এটা নিয়ে লেখার এমন তাড়না বোধ করছি? কিংবা এই বিষয় নিয়ে
আমার কী এমন অভিজ্ঞতা আছে; যা লিখলে তা মানুষের জীবনে ক�োনো ভ্যালু
যোগ করতে পারে?’ খুব স্পষ্ট কোন উত্তর ভেতর থেকে পেলাম না। একইসাথে
তাড়নাটাকেও তাড়াতে পারিনি।
পরে বুঝতে পারলাম—এটা হলো আমার ব্যক্তিগত পারিবারিক জীবনের
বিপরীতমুখী অভিজ্ঞতার অবচেতন প্রভাব। এটাই হয়তো আমার অবচেতনমনে
এক ধরণের তাড়না তৈরি করেছে।
ব্যক্তিগত জীবনে আমার একটু বিচিত্র ও বিপরীতধর্মী অভিজ্ঞতা রয়েছে।
প্রতিনিয়ত সেই জীবনধারার মধ্য দিয়ে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনও করছি।
আমার মনে হয় আমি এই ক্ষেত্রে খানিকটা বিরল অভিজ্ঞতা রাখা একজন মানুষ।
বোধ হয়। বলি, কী সেই বিপরীতধর্মী ও বিচিত্র অভিজ্ঞতা।
আমি নিজে লেখাপড়া করেছি কওমি মাদরাসায়, কিন্তু কর্মজীবনে সহকর্মী
হয়েছি এমন অনেক মানুষের; যারা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যলায়ে লেখাপড়া
করেছেন—যাদের মধ্যে নারী-পুরুষ উভয়ই ছিলেন। আবার যখন থেকে প্রতিষ্ঠান
পরিচালনার মতো দায়িত্ব কাঁধে চেপেছে, তখন থেকে আমার টিমেও অনেক নারী-
পুরুষ কাজ করেছেন, করছেন; যারা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন
করেছেন। আমি সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত এসব মানুষের জীবনধারার খানিকটা এবং
চিন্তাধারার কিয়দাংশ কাছ থেকে দেখেছি। তাদের প্রাত্যহিক জীবনের চাওয়া-
পাওয়া, সুবিধা-অসুবিধাগুলোও প্রত্যক্ষ্য করেছি কাছ থেকে।
আমার দুটি বোন। তাদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েটেড;
বেশ স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত; তার হাজবেন্ডও একটি মাল্টিন্যাশনাল
কম্পানিতে কর্মরত। আরেক বোন মেট্রিকও পাশ করেনি; তার আগেই বিয়ে হয়ে
গেল। সংসার-সন্তান সামলাতে গিয়ে লেখাপড়ার পাট সেখানেইে চুকাতে হলো।
তার হাজবেন্ড বর্তমানে দেশের একটি ইসলামী ব্যাংক-এর একজন ম্যানেজার।
আর আমার বোনটা একজন পূর্ণকালীন স্ত্রী ও মা হিসেবে সাংসারিক জীবনযাপন
করছে।
আমার দুজন স্ত্রী। তাদের একজন ইন্টারমিডিয়েট লেভেলের। যথেষ্ট মেধাবী
হওয়া সত্ত্বেও অল্প বয়সে সংসার ও সন্তানের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক
লেখাপড়া আর চালিয়ে যেতে পারেননি; পূর্ণকালীন সংসার-সন্তান সামলাচ্ছেন।
আমার আরেকজন স্ত্রী একযোগে বুয়েট, ঢাবি ও মেডিক্যালে চান্স পেয়েছিলেন;
অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ থেকে লেখাপড়া শেষ করেন।
বর্তমানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। ভুলে গেলে চলবে না যে,
তাকেও একই সাথে ঘরসংসার ও সন্তান সামলাতেই হচ্ছে।
বিস্তারিত আলোচনায় গেলে এমন আরেকটা পূর্ণ বই লিখতে হবে। তাই
সংক্ষেপেই বলব। যদি আমার দুই বোনের জীবনে সুখস্বাচ্ছন্দ্য ও আরাম
আয়েশের তুলনামূলক চিন্তা করি, তাহলে স্পষ্টতই দেখতে পাই—যে নিজেকে …
Leave a comment