তোত্তোচান – জানালার ধারে ছোট্ট মেয়েটি : তেৎসুকো কুরোয়ানাগি

 

বই: তোত্তোচান- জানালার ধারে ছোট্ট মেয়েটি
লেখক: তেৎসুকো কুরোয়ানাগি
অনুবাদ : চৈতী রহমান
প্রকাশনীঃ দুন্দুভি
মুদ্রিত মুল্যঃ ২৫০ টাকা
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৫৬
ব্যক্তিগত রেটিং: ৪.৮/৫

আমাদের দেশে শিশুদের অনেক শাসন, বারণ,ভয়-ভীতির মধ্যে দিয়ে বড় করা হয়।বিদ্যালয়েও কোনো ব্যতিক্রম দেখা যায় না।পড়া না পারলে, কৌতূহলী হলে বরাবর শাস্তি পেতে হয়। জীবনের ভিত্তি শৈশব থেকে শুরু হয়।সেই শৈশব এতো জটিল হলে পরবর্তী জীবন সহজ হবে কি করে?

ছোট্ট তোত্তো-চান ও কিন্তু আমাদের মতো পরিস্থিতিতে ছিলো এক সময়, তারপর সে পেয়ে যায় তার স্বপ্নের বিদ্যালয়।যেখানে শাসন-বারণ,ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে শিশুদের শিক্ষা দেওয়া হয়।যে বিদ্যালয়ের স্বপ্ন আমাদের সবার। তোত্তো-চান এর বাবা-মা ও তার সঠিক বিকাশে সচেতন ছিল।কড়া শাসনের বাইরে তারা সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে তোত্তো-চান এর কৌতূহলী কথা শুনতো,তাকে উৎসাহ দিতো।

তোত্তো-চান হলো এক পিচ্চি বাচ্চা জাপানি মেয়ে। যার মনে ঘুরতে থাকে হাজার হাজার প্রশ্ন কিন্তু বাচ্চার মনের অবান্তর চিন্তা ভেবে নিয়ে তাকে কেউ পাত্তা দেয় না। সে যেই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলো, সেখান থেকেও তাকে ছাড়িয়ে দেয়া হয় কারণ সে একটু ভাবুক বলে। একটা বাচ্চার জানার ইচ্ছা থাকবে সেটা স্বাভাবিক কিন্তু এই সুযোগটা তোত্তো-চান পায় নি।

একদিন তোত্তো-চান এর মা গতানুগতিক ধারার বাইরে একটি স্কুলের খোঁজ পান। সেই স্কুলটির নাম হলো, “তোমোয়েগাকুয়েন বিদ্যালয়”। তোত্তোচানের বুদ্ধিদিপ্ত কথার জন্যেই সেই স্কুলে তাকে ভর্তি করিয়ে নেয়। যেই মেয়ে আগের স্কুলে যেতেই চাইতো না, সেই মেয়ে পরের স্কুল কামাই দিতেই চায় না। কারণ?

কারণ এখানে ক্লাস হয় রেলগাড়িতে, এখানে বাচ্চারা খাবার নিয়ে আসে কিছুটা পাহাড় থেকে কিছুটা সমুদ্র থেকে, এখানে যার যেই বিষয় পছন্দ সেই বিষয়েই পড়তে পারে। নেই কোনো অশাসন, শুধুই যেনো মায়ায় জড়িয়ে আছে পুরো স্কুল টা৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিদ্যালয়টি ধ্বংস হয়ে গেলেও সেখান থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা সকল শিক্ষার্থী পরবর্তী জীবনে অনেক কাজে লাগাতে পারে।

পুনশ্চঃ বইটির প্রতিটি চরিত্রই বাস্তব, স্কুলটাও বাস্তব, ঘটনা গুলোও বাস্তব ।আমার মনে হয় সকল অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী-র বইটি পড়া উচিত।

[ছবি সংগৃহীত]

Leave a Reply 0

Your email address will not be published. Required fields are marked *