পৃথিবীর রং-তামাশা! – সিয়ান

| পৃথিবীর রঙ-তামাশা |

বেদনাই দুনিয়াবি জীবনের সারকথা। যদিও জীবনের রঙ-চং, বিনোদন, উচ্ছ্বাসের তীব্রতা—এইসব দেখে মনে হয় জীবনটা বোধহয় কখনোই ফুরাবে না।

এই তো সেদিনের কথা, ছোট্ট ছেলেটি ছিলাম। দেখতে দেখতে বয়স ত্রিশের কোঠায়। একদিন বার্ধক্যে যাবো, হয়তো বা তার আগেই মারা যাবো।

আমি তো আল্লাহকে বিশ্বাস করি। আখিরাত আছে বলে মানি। কিন্তু তবুও কেন ছোট্ট এই দুনিয়ার জীবনকেই বেশি প্রায়োরিটি দিয়ে বসি জানি না। আমার জীবনে আজ আনন্দের বাঁধভাঙা বন্যা, শুধুমাত্র পছন্দের ফুটবল টিম জিতে গেছে বলে, কিংবা পছন্দের চাকরিটা পেয়ে গেছি বলে—অথচ হাসপাতালে এমন অনেক রোগী আছে—যাদের কাছে একেকটা নিঃশ্বাস নিতে পারাই হয়তো একেকটা বিজয়ের মতো।

সুবহানআল্লাহ, যে মৃত্যুসজ্জায় পড়ে যায়—তার ব্যাপারে মানুষ হাল ছেড়ে দেয়, যাতে একজন মৃত্যুপথযাত্রীকে নিয়ে পেরেশানিতে ভুগে নিজের আনন্দ ও ভোগবাদকে নষ্ট করতে না হয়। ওই মৃত্যুপথযাত্রীর কাছে জীবনের সরূপ কেমন? বেদনাই কি তার কাছে জীবনের সারাংশ নয়?

আমরা আমাদের চারপাশটা নিয়ে পেরেশানিতে পড়ি। অথচ আমাদের ভাবা দরকার নিজেকে নিয়ে, নিজের আত্মাকে নিয়ে, নিজের অস্থির হৃদয়টাকে নিয়ে। পৃথিবীর রঙ-তামাশা যতই হৃদয়কে মোহগ্রস্থ করতে চায়—ততই আমাদের উচিত কুরআন-সুন্নাহর পঠন ও আমলের মাধ্যমে নিজের ঈমানকে বারবার তাজা করে নেওয়া।

আমরা তো দুইদিনের মুসাফির। গৃহস্থের বিলাসিতা আর আরামায়েশ আমাদের ত্যাগ করা উচিত। অথচ পারি কই? আমরা আমাদের মস্তিষ্ককে বর্গা দিয়ে ফেলেছি। সেই মস্তিষ্কের সার হলো বিনোদন মাদক। এই মস্তিষ্ক মাদকের জন্য বাঁচে, মাদকের জন্য মরে।

সিয়ান | বিশুদ্ধ জ্ঞান | বিশ্বমান