প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ-৩ লেখকঃ আরিফ আজাদ

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ-৩’। লেখা হচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ। ভিন্ন আমেজে, একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। কখন প্রকাশিত হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। বরাবরের মতোই— আপনাদের দুয়া চাই।

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ-৩ লেখকঃ আরিফ আজাদ Paradoxical Sajid part 3 pdf download প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ৩ পিডিএফ ডাউনলোড Arif azad all book pdf download

(✍️ This article is collected from author timeline 📚

(All Credit To Go Real Hero The Author of this article 📖)

‘নাহ, আর পারলাম কই?’— হাতে থাকা মোবাইলটা টেবিলের ওপর ধপাস করে রেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে বললাম।
-‘কী ব্যাপার! কী নিয়ে এতো হাপিত্যেশ করা হচ্ছে?’
ঘাঁড় ঘুরে পেছনে তাকাতেই আমি পুরোপুরি চমকে গেলাম! যদিও সাজিদকে দেখে চমকানোর কিছু নেই, কিন্তু ঠিক এই মুহূর্তে তার এখানে থাকবার কথা নয়। ব্যবসায়িক কাজে আঙ্কেলকে আমেরিকা যেতে হচ্ছে। সাজিদ খোঁজ নিয়ে জেনেছে নিউইয়র্কে এখন একটা বিজ্ঞান মেলা হচ্ছে আর সেই মেলা দেখার জন্যে আঙ্কেলের সফর সাথী হয়েছিলো সে। আমাকে সাথে যেতে অনুরোধ করেছিলো, কিন্তু নিউইয়র্কে এই সময়ে যে ঠান্ডা আবহাওয়া, শুভ্র বরফের দেশে গিয়ে বিজ্ঞান মেলা দেখার আনন্দের চাইতে টনসিলের ব্যথার যন্ত্রণা আমার কাছে অনেক বেশি চিন্তার! সুতরাং, ‘বেঁচে থাকলে মেলা অনেক দেখা যাবে’— এই অযুহাতে তাদের সাথে যাওয়া হতে নিজেকে বিরত রাখলাম।
তবে, আজকে তো সাজিদের বাংলাদেশে থাকবার কথা নয়! এমনকি, ব্যাগ-পত্তর যা-কিছু নিয়ে গিয়েছিলো, সবকিছু সাথে নিয়ে ফিরে এসেছে।
ধীর পায়ে নিজের খাটে গিয়ে বসলো সে। চোখ থেকে চশমাটা খুলে তা আমার দিকে ধরে বললো, ‘এই দ্যাখ, বাম পাশের কাঁচটা একটু ভেঙে গেছে আজ’।
যেন মহা বিপদ হয়েছে এমন একখানা ভাব! তাকে দেখে আমি যে ভূত দেখার মতো চমকে গিয়েছি এবং কেনো সে নিউইয়র্ক না গিয়ে মেসে ফিরে এসেছে সে কাহিনী শুনবার জন্য যে আমি উন্মুখ হয়ে আছি— এটুকু বুঝতে না পারার মতো অবুঝ সে নয়। কিন্তু সেসব বাদ দিয়ে রুমে ঢুকেই তার কাছে জরুরি হয়ে উঠলো তার চশমার কাঁচ ভাঙার ঘটনা এবং ঘটা করে তা আমাকে না বললেও সে শান্তি পাচ্ছে না।
কিন্তু, আমিও তো কম যাই না! গলায় দরদ আর দয়ার আবেশ উদ্রেক করে বললাম, ‘আহারে, কী এক মুসিবতেই না পড়তে হলো তোকে! তা, চশমার কাঁচ ভেঙে যাওয়াতেই কি তোদের নিউইয়র্কের ফ্লাইট মিস হলো?’
মনে হলো সে আমার ইয়ার্কিটা ধরতে পারেনি। ব্যাগ থেকে বইপত্র আর কাপড়-চোপড় বের করতে করতে বললো, ‘তা নয়। পরশুদিন সন্ধ্যায় ডেভিড আমাকে ইমেইল করে জানালো যে নিউইয়র্কের বিজ্ঞান মেলাটা স্থগিত হয়েছে। কোভিডের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় বছরের অন্য কোন সময়ে মেলাটা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কাল সকালবেলা বাবার রুমে গিয়ে বললাম, ‘বাবা, নিউইয়র্কের মেলাটা স্থগিত হয়েছে কোভিড সমস্যার কারণে’।
-‘তো, আঙ্কেল কী বললেন?’
-‘বাবা বললেন, ‘মেলা যে স্থগিত হয়েছে তা আমি কাল রাতেই জানতে পেরেছি। সমস্যা নেই, তোমার টিকেট আমি কাল রাতেই ক্যানসেল করেছি। রাত একটু বেশি হওয়াতে তোমাকে আর জানানো হয়নি’।
আমি ভারি আশ্চর্য গলায় বললাম, ‘আঙ্কেল টিকেট ক্যানসেল করলেন কেনো? মেলা নাই-বা হলো, আমেরিকায় কি মেলা ছাড়া আর দেখার মতো কিছু নেই?’
হ্যাঙারে জামা ঝুলাচ্ছিলো সে। এই কথা শুনে সে আমার দিকে ফিরে বললো, ‘বাবা খুব ভালো করেই জানতেন মেলা না হলে আমি নিউইয়র্কের ফ্লাইটে চড়বো না। নিশ্চিতভাবেই বাবাকে অনুরোধ করবো টিকেট ক্যানসেল করার জন্য। এইজন্যে মেলা স্থগিতের খবর শুনেই তিনি টিকেট ক্যানসেল করে রেখেছেন’।
এদের বাপ-ব্যাটার গল্প শুনে ‘বাপ-কা ব্যাটা’ বলে সাজিদের পিট চাপড়ে দেবো, নাকি ‘ব্যাটা-কা বাপ’ বলে আঙ্কেলের দুরদর্শিতার প্রশংসায় গদগদ হবো, অথবা, নাকি এদের এতো নিরাসক্ত, নিরামিষ হাবভাব দেখে দুঃখে মূর্ছা যাবো তা নিয়ে আমি রীতিমতো দ্বিধায় পড়ে গেলাম!
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ-৩’। লেখা হচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ। ভিন্ন আমেজে, একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। কখন প্রকাশিত হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। বরাবরের মতোই— আপনাদের দুয়া চাই।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?