যেভাবে মজা করতেন নবীজি সা.

হাদিস শরিফের ঘটনা। একবার এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে একটি উট দিন।’

সে সময় উটকে সবচে’ মূল্যবান সম্পদ মনে করা হতো। আর উট-ওয়ালাকে ধনী মনে করা হতো। যার কাছে যতো বেশি উট থাকত সে ততো অধিক ধনী ছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমি তোমাকে উটনির বাচ্চা দেবো।’

ওই ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি উটনির বাচ্চা দিয়ে কী করবো? আমার তো উট প্রয়োজন, যা আমার বাহনের কাজে দেবে।

রাসূলুল্লাহ বললেন, প্রত্যেক উটই তো কোনো না কোনো উটনির বাচ্চা।
.
আরেকদিনের ঘটনা। এক বৃদ্ধা নবীজিকে বলল, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার জন্যে দোয়া করুন! আল্লাহ তায়ালা আমাকে যেন জান্নাতে প্রবেশ করান।’

তখন নবীজি বললেন, ‘কোনো বৃদ্ধা জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’
.
এ কথা শুনে বৃদ্ধা মহা চিন্তায় পরে গেল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দেখলেন, বৃদ্ধা চিন্তিত হয়ে গেছেন, তখন বললেন, ‘আমার কথার উদ্দেশ্য হলো, কোনো মহিলা বৃদ্ধা অবস্থায় জান্নাতে যাবে না। বরং যুবতী হয়ে তবেই জান্নাতে যাবে।’
.
দেখুন! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কৌতুক করলেন এবং চমৎকার কথা বললেন। কিন্তু তার মধ্যে কোনো মিথ্যা বা ভুলের আশ্রয় নেয়া হয়নি। এ ধরনের কৌতুক করাও নবীজির সুন্নত। সুতরাং যখন কোনো ব্যক্তি সুন্নতের নিয়ত করে কৌতুক করবে, তবে ইনশাআল্লাহ তার উপরও সাওয়াবের আশা করা যায়।
.
আমাদের যতো বুযুর্গানেদীন অতীত হয়েছেন তারা সবাই হাসিখুশি ও শান্ত মনের লোক ছিলেন। তারা কখনো এমন ছিলেন না যে, চুপচাপ মন কালো করে বসে আছেন, আর কারো সঙ্গে কোনো হাসি মুখে কথাই বলেননি। বরং তারা সকলে নিজের সাথীদের সঙ্গে হাসি মুখে ফুর্তিতে কথা বলতেন। কোনো কোনো বুযুর্গ তো হাসি খুশির মধ্যে প্রসিদ্ধ ছিলেন। কিন্তু তাদের ফুর্তি আর কৌতুকের মধ্যে মিথ্যার লেশ মাত্রও ছিলো না।
.
যখন আল্লাহ তায়ালা কোনো বান্দার ওপর এমন রহমত করেন তখন তার মুখ এমন করে দেন যে, তার মুখে কখনো মিথ্যা বলা তো দূরের কথা, ঠাট্টা বা তিরস্কারও আসতো না।
.
— মুফতি তকি উসমানি

শাইখের ‘ইসলাহি গল্প’ বই থেকে চয়িত।
.
শীত বই সপ্তাহ ২.০ উপলক্ষে বইটি ওয়াফিলাইফে পাচ্ছেন ৫২% ছাড়ে!